শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

বাংলাদেশে আদিবাসী ভাষার সার্বিক অবস্থা: বর্তমান প্রেক্ষিত

লেলুং খুমি*


বাংলাদেশ একটি বহুজাতি-সংস্কৃতি, বহু ধর্ম এবং বহু ভাষার দেশ। এই দেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে পৃথিবীর বুকে ১৯৭১ সালে পরিচিতি লাভ করে। এই পরিচিতি লাভের বহু পূর্বে থেকে এই বিচিত্রতা বাংলাদেশে ছিল এবং এখনো আছে। যা বাংলাদেশের সকলের অহংকার ও গর্ব। এই বৈচিত্রেরই অন্যতম দিক এ আদিবাসীদের বৈচিত্রময় ভাষা, সংস্কৃতি ও সামাজিক রীতিনীতি। সুদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ এই বৈচিত্র্য লালন করে পৃথিবীর বুকে বেঁচে থাকবে কিনা তা আজ নানান প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে দাঁড়িয়েছে অনেকের কাছে।



আদিবাসীদের জীবন ধারারই একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ/উপাদান ‘আদিবাসী ভাষাসমূহ’ এই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের বুকে কত দিন, কত বৎসর বেঁচে থাকবে তা আমার আজকের মূল আলোচ্য বিষয় নয়। আমার মূল আলোচ্য বিষয় হলো বাংলাদেশের ৪৫টির বেশি আদিবাসী ভাষার সার্বিক অবস্থা তুলে ধরা। আদিবাসী ভাষাগুলির সার্বিক অবস্থা তুলে ধরার জন্য আমি প্রথমত, আদিবাসীদের ভাষা সংরক্ষণের জন্য বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন নীতিমালা ও বাস্তবায়নধীন কার্যক্রম পর্যালোচনা করার চেষ্টা করবো। দ্বিতীয়ত, আদিবাসী ভাষা সংরক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আইন, বিভিন্ন এনজিও সম্প্রদায় ভিত্তিক কার্যক্রম ও পদক্ষেপ তুলে ধরবো। তৃতীয়ত, আদিবাসীদের ভাষা সংরক্ষণের গুরুত্ব, বর্তমান অবস্থার কারণসমূহ, সুযোগ ও সীমাবদ্ধতার বিষয়ে আলোকপাত করবো। অবশেষে, আদিবাসী ভাষাগুলি সংরক্ষণে কার কী করণীয় তা চিহ্নিত করণের মাধ্যমে সুপারিশমালা তৈরি করে এই প্রবন্ধটি সমাপ্তি টানবো।



বাংলাদেশে প্রায় ৩০ লক্ষ আদিবাসী জনগোষ্ঠী ৪৫টিরই বেশি ভিন্ন ভিন্ন ভাষায় কথা বলে। তাদের মধ্যে কিছু জনগোষ্ঠী ইন্দো-এ্যারাবিয়ান, কিছু তিব্বতি-বার্মিজ, কিছু তিব্বতি কুকি-চীন, কিছু অস্ট্রে-এশিয়াটিক এবং কিছু অংশ সিনো-টিবেটান পরিবারে অন্তর্ভুক্ত। এই ৪৫টির বেশি ভাষার মধ্যে ২,০০০- ১০,০০০ জন রয়েছেন এমন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সংখ্যাই বেশি। তারা সাধারণত মৌখিক ভাষার মাধ্যমে বংশ পরম্পরায় নিজেদের অলিখিত সাহিত্য, লোকগীতি, গল্প, পৌানিক কাহিনী ও ধাঁধাঁ বাঁচিয়ে রাখছে। এখনো অনেক আদিবাসীদের লিখিতরূপ নেই। আবার লিখিতরুপ থাকলেও তা প্রাতিষ্ঠানিক চর্চা হয়না নানা কারণে। ফলে, বাংলাদেশে অনেক আদিবাসী ভাষা বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে, কিংবা বিলুপ্তি হওয়ার পথে। এই বিলুপ্তির পথ থেকে আদিবাসীদের ভাষা রক্ষা করার গুরুত্ব অনস্বীকার্য।



আদিবাসী জাতিসমূহের ভাষাগুলি রাষ্ট্রীয়ভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করে রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আদিবাসীদের ভাষা সংরক্ষণে সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা প্রণয়ন করে তা যথাযথ বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে কালের গর্ভে এই বৈচিত্রময় ভাষাগুলি পৃথিবীর বুক থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে। ইতোমধ্যে গাজীপুরের বর্মণ, পার্বত্য চট্টগ্রামের লুসাই, ময়মনসিংহের শেরপর অঞ্চলে কোচ ও ডালু, সিলেট ও মৌলভীবাজারের খাসিয়াসহ আরো অনেক আদিবাসীদের ভাষা চর্চার অভাবে, লিখিতরূপ না থাকার কারণে কিংবা বাংলার প্রভাবে বর্তমান প্রজন্মের প্রায় সবাই নিজেদের ভাষায় কথা বলতে পারে না। আবার কিছু কিছু নতুন প্রজন্মেদেরকে নিজ ভাষার সাথে মিশ্রিত বাংলা ভাষায়ও ভাব বিনিময় করতে দেখা যায়। এসব বিলুপ্ত প্রায় ভাষাসহ সব আদিবাসীদের ভাষাগুলি অতীব গুরুত্ব সহকারে সংরক্ষণে সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে; কেবল বেসরকারি কিংবা সম্প্রদায় ভিত্তিক সামাজিক সংগঠনগুলি আন্তরিকতার সঙ্গে সংরক্ষণে উদ্যোগ নিলেও তা সম্ভব হবে না। কারণ ইতোমধ্যে অনেক বেসরকারি সংস্থা ও আদিবাসী সম্প্রদায় ভিত্তিক উদ্যোগ ছাড়াও অনেক জাতীয় ও স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা বিভিন্ন আঙ্গিকে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তা যথাযথ বাস্থবায়ন করা যাচ্ছে না কেবল সরকারের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের অভাবে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যে ভাষা সংরক্ষণ চর্চার ক্ষেত্রে সম্প্রদায়ভিত্তিক সামাজিক উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়। যেমন- বম জনগোষ্ঠী নিজেদের উদ্যোগে লিখিতরূপ চর্চা করে। তাছাড়া চাকমা, মার্মা, ¤্রােসহ আরো কিছু কিছু জনগোষ্ঠী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীক কিংবা স্ব-উদ্যোগে ক্ষুদ্র পরিসরে হলেও তা চর্চা করে থাকে। তবে অধিকতর সংখ্যালঘু আদিবাসী জনগোষ্ঠী যেমন- চাক, খিয়াং, খুমী, লুসাই, পাংখোয়া যাদের ভাষা অচিরে হারিয়ে যাবে তাদের ভাষাগুলি সেভাবে চর্চা করার সুযোগ নেই। পার্বত্য চট্টগ্রামের বাহিরে বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলে বসবাসরত আদিবাসীদের ভাষা সংরক্ষণের ক্ষেত্রে অনুরূপ চর্চা হয় না বললেই চলে। আদিবাসীদের ভাষা সংরক্ষণে স্বল্প পরিসরে গৃহীত সম্প্রদায়ভিত্তিক এসব উদ্যোগগুলিকে আরো গতিশীল ও কার্যকর করার জন্য কিছু কিছু বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বর্তমানে এগিয়ে আসছে তা নি:সন্দেহে স্বীকার করতে হবে।



পার্বত্য চট্টগ্রামে UNDP_CHTDF, SAVE THE CHILDREN, SIL INTERNATIONAL, KARITAS, BRAC স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার সাথে যৌথভাবে “মাতৃভাষা ভিত্তিক বহুভাষী শিক্ষা” কার্যক্রম চালু করার জন্য বিচ্ছিন্নভাবে স্বল্প মেয়াদি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। তারা এসব প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠী প্রতিনিধিদের সহযোগিতায় প্রাক-প্রাথমিক পাঠ্যপুস্তক শিক্ষা উপকরণ তৈরি করে শিক্ষদের প্রশিক্ষণ দিয়ে নিজেদের পরিচালিত আদিবাসী গ্রামগুলিকে শিক্ষা দেয়ার চেষ্টা করছে। এই কার্যক্রমের অনেক ইতিবাচক দিকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। যেমন- শিশুরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে জড়তা ছাড়া শ্রেণিকক্ষে শিক্ষদের সাথে ভাব বিনিময় করতে পারছে। লেখাপড়ায় মনোযোগী হচ্ছে। ফলে ড্রপ আউটের সংখ্যা কমেছে এবং তুলনামূলকভাবে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। কিন্তু সরকারের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও কার্যকরী নির্দেশনার অভাবে যথাযথ বাস্তবায়ন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এই সম্ভাবনাময় কার্যক্রম যথাযথ বাস্তবায়ন করা গেলে বর্তমানে ও নতুন প্রজন্মের অনেক আদিবাসী শিশুরা নিজেদের মাতৃভাষার লিখিতরূপ উন্নয়ন করে তা চর্চার মাধ্যমে তাদের বিলুপ্তিমুখী ভাষাগুলি রক্ষা করতে সক্ষম হবে বলে আশা করা যায়। এই বৈচিত্র্যময় আদিবাসীদের ভাষা রক্ষণের/রক্ষণার্থে সম্প্রদায় ভিত্তিক উদ্যোগ ও বেসরকারি সংস্থাগুলির পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারও কিছু কিছু নীতিমালা গ্রহণ করেছে; যদিও যথাযথ বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ/ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়নি।



বাংলাদেশ সরকার আদিবাসীদের ভাষা সংরক্ষণের অংশ হিসেবে “জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০১০” অধ্যায়-২ “প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা” শিরোনামে “আদিবাসী শিশু” অনুচ্ছেদ-১৮তে বলেছে “আদিবাসী শিশুরা যাতে নিজেদের ভাষা শিখতে পারে সেই লক্ষ্যে তাদের জন্য আদিবাসী শিক্ষক ও পাঠ্যপুস্তক ব্যবস্থা করা হবে। এই কাজে বিশেষ করে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নে আদিবাসী সমাজকে সম্পৃক্ত করা হবে।” অনুচ্ছেদ-১৯ এ বলা হয়েছে আদিবাসী প্রান্তিক শিশুদের জন্য বিশেষ সহায়তার ব্যবস্থা এবং অনুচ্ছেদ-২০ এ বলা হয়েছে আদিবাসী অধ্যুষিত যেসব এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই সেখানে প্রাথমিক কিদ্যালয় স্থাপন এবং শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জন্য আবাসিক ব্যবস্থার দিকে নজর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এই শিক্ষানীতি পাহাড় কিংবা সমতলের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অনুরূপভাবে পৃথিবীর সব মাতৃভাষা সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে ২০০১ সালে “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট” স্থাপন করেছে তৎকালীন আওয়ামীলীগ সরকার। এর পাশাপাশি বর্তমান সরকার ২০১০ সালে “উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট” এর নাম পরিবর্তন করে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক আইন’২০১০ প্রণয়নের মাধ্যমে আদিবাসীদের সাংস্কৃতিক বিকাশ সাধনের পাশাপাশি তাদের ভাষা সংরক্ষণের গুরুত্বের কথা স্বীকার করেছে। বাংলাদেশে আদিবাসীদের ভাষা- সংস্কৃতি চর্চা, সংরক্ষণ তথা রক্ষণার্থে উপরিল্লেখিত যেসব আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে তা সর্বজনবিদিত। অধিকন্তু, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভাষা সংরক্ষণের কথা পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় আইনেও সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। বান্দরবন, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন-১৯৯৮ এর ৩৬(ঠ) ধারায় ‘মাতৃভাষার মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা’কে আইনগতভাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে যা যথাযথ বাস্তবায়ন হলে আদিবাসীদের ভাষা সংরক্ষণে অনস্বীকার্য ভূমিকা রাখবে। এছাড়া, সংখ্যাগরিষ্ট আদিবাসীদের ভাষায় বাংলাদেশ বেতার থেকে “পাহাড়িকা অনুষ্ঠান” নামে প্রতি সপ্তাহে গান, গল্প ও জাতীয় সংবাদ প্রচার করা হয়।



আদিবাসীদের ভাষা সংরক্ষণে বাংলাদেশ সরকার যেসব নীতিমালা প্রণয়ন করছে; তা যথাযথ বাস্তবায়ন করা হলে যেমনি ভাষাগুলি সংরক্ষিত হবে তেমনি এ সরকার আন্তর্জাতিক সনদ বা দলিলে অনুস¦াক্ষর করে যে অঙ্গিকার করেছে তা যথাযথ সস্মান প্রদর্শন পূর্বক রক্ষা করেছে বলে বিশ্ব দরবারে প্রশংসিত হবে।
বাংলাদেশ সরকার ১৯৭২ সালের ২ শে জুন ILO CONVENTION-১০৭ অনুস্বাক্ষর করে বিশ্ববাসীর নিকট অঙ্গিকার করেছে যে, “আদিবাসী জনগোষ্ঠী শিশুদেরকে তাদের মাতৃভাষায় পড়া ও লিখার জন্য শিক্ষাদান করবে কিংবা যেখানে এটা সম্ভব নয়, সেখানে সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ভাষাতেই সে শিক্ষা প্রদান করবে” আইএলও-২৩(১)।



এছাড়া বাংলাদেশ সরকার স্বাক্ষরিত “জাতিসংঘ শিশু সনদ”এর ৩০ নং ধারায় উল্লেখ রয়েছে “যেসব দেশে জাতিগোষ্ঠীগত, ধর্মীয় কিংবা ভাষাগত সংখ্যালঘু কিংবা আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোক রয়েছে, সেসব দেশে ওই ধরণের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত বা আদিবাসী শিশুকে সমাজে তার নিজস্ব সংস্কৃতি ধারণ, নিজস্ব ধর্মের কথা ব্যক্ত করা ও চর্চা করা, তার সম্প্রদায়ের অপরাপর সদস্যদের সাথে ভাষা ব্যবহার করার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।”
১৯৬৬ সালে জাতিসংঘ ঘোষিত International Convention and Political Rights এর ২ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে “যেসব রাষ্ট্রে নৃ-তাত্ত্বিক, ধর্মীয় বা ভাষাভিত্তিক সংখ্যালঘু বাস করেন, সেখানে ওই সব সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলির মানুষেরা ব্যক্তিগত এবং সমষ্টিগতভাবে তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি, নিজেদের ধর্ম অনুসরণ করা ও প্রচারের অধিকার নিরংকুশ ভোগ করবে”। এসমস্ত আন্তর্জাতিক চুক্তি কিংবা সনদগুলি অনুস্বাক্ষর, রাষ্ট্রীয় নীতিমালা প্রণয়নসহ সম্প্রদায়ভিত্তিক উদ্যোগ বিদ্যমান থাকার পরও আদিবাসীদের ভাষা দিন দিন বিলুপ্ত হচ্ছে। এই বিলুপ্ত প্রায় ভাষাগুলিকে রক্ষা কিংবা সংরক্ষণে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করে তা যথাযথ বাস্তবায়নে সরকারকেই আন্তরিকতার সাথে এগিয়ে আসতে হবে।



বাংলাদেশের আদিবাসীদের ভাষার সার্বিক অবস্থার প্রেক্ষিতে নিন্মে কিছু সুপারিশমালা দেয়া হলো-
১. জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ যথাযথ বাস্তবায়নসহ সরকারের প্রণীত অন্যান্য আইন বা নীতিমালা জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর করা
২. পাঠ্যপুস্তকে আদিবাসীদের ভাষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক content রাখা
৩. পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে “আদিবাসী বিষয়ক শিক্ষা” বিভাগ চালু করে আদিবাসী ভাষা সংরক্ষণে ব্যবস্থা করা
৪. আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আদিবাসীদের ভাষা বিষয়ক গবেষণা শাখা রাখা
৫. আদিবাসী ভাষা একাডেমী স্থাপন করা
৬. গনমাধ্যমে আদিবাসীদের নিজস্ব ভাষায় অনুষ্ঠান পরিচালনা করা।



প্রবন্ধটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্তরে ২২ ফেব্রুয়ারি পঠিত হয়েছে।



লেলুং খুমি: লেখক ও ভাষাবিষয়ক গবেষক, বান্দরবন জেলা পরিষদের পরিকল্পনা কর্মকর্তা।

কোন মন্তব্য নেই: